অরুণ আলোয়
মেকি ভদ্র লোকের সংস্কৃতি মাড়িয়ে একজন সন্ত ও একজন কবি কীভাবে লেলিহান বহ্নুৎপাতের দিনে পুড়ে যেতে চায় তা অরুণেশ ঘোষ দিয়ে বুঝতে হয়। এবং অরুণেশ কেবল নামমাত্র নন, তিনি এই তাবৎ ধান্দাবাজির জগতে প্রবল একগুঁয়ে জেদি ও তথাকথিত প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি-অস্বীকৃতির পরােয়া না করা একজন লেখক। গঙ্গেশচন্দ্র ঘােষ ও শান্তিসুধা ঘােষের পুত্র অরুণেশের জন্ম ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৪১, মৃত্যু ২৪ আগস্ট, ২০১১। এ পর্যন্ত তার ২০টিরও বেশি বই প্রকাশিত। কবি শৈলেশ্বর ঘােষের বিশেষ উদ্যোগে ১৯৮১ সালে অরুণেশের সাড়াজাগানাে কাব্যগ্রন্থ ‘শব ও সন্ন্যাসী’ প্রকাশিত হয়। অরুণেশ সেই বুনিয়াদি শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত প্রান্তিক মানুষজনেদের একজন যিনি আশ্চর্যভাবে বাংলা কবিতাকে সাবালক করলেন ফরাসি কবি জাঁ আর্তুর র্যাবকে বাংলায় অনুবাদ করে। সামাজিক সমঝােতা ও ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা যেভাবে প্রলুব্ধ রাখে একজন লেখককে খুব কম জনই নিজেকে তা থেকে মুক্ত রাখতে পারেন, স্বীকৃতি নামক অলীক মায়া কবচ গলায় না ঝুলিয়েও দিব্যি কাটিয়ে দিতে পারেন একটা মানুষজীবন মুহূর্তের বিচ্যুতি না ঘটিয়েও। ২০০৬-এরপর থেকে কয়েকটি লিটল ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে অরুণেশকে সম্মানিত করা হয়। এগুলির মধ্যে সারস্বত সম্মান, বিবৃতি এবং বিকল্প কবি জীবনানন্দ স্মারক সম্মান দরিয়া, সৃজন সম্মান উল্লেখযােগ্য। অরুণেশ মরণোত্তর বর্ণপরিচয়-সংবাদ প্রতিদিন সম্মান (২০১১) ও পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি সম্মান (২০১২)-এ সম্মানিত করা হয়।
(ঋণ : প্রতিভাস / শ্রেষ্ঠ কবিতা – অরুনেশ ঘোষ)
0 Comments