উত্তরবঙ্গের প্রথম বিশেষ জৈন নিদর্শন “প্রতিমাসর্বতভদ্রিকা” দিনাজপুরের কোতোয়ালিতে
২০১৪ সালে যেবার প্রথম উত্তর দিনাজপুর জেলা মিউজিয়ামে গিয়েছিলাম সেবার ঘুরে দেখতে দেখতে অনেক কথা হয়েছিল তখনকার কিউরেটারের সাথে। উনি “আইকনোগ্রাফির” উপর গবেষণাও করছিলেন। বহুদিন হয়েছে আর কোন যোগাযোগ নেই। তবুও এই লেখা যদি উনি কোনভাবে পড়েন ; তাহলে আমি নিশ্চিত যে উনি খুবই আনন্দিত হবেন। চাকরিসূত্রে দীর্ঘকাল একটা সময় তিনি বালুরঘাটে কাটিয়ে গেছেন। বারবার সেইসময় কর্নজোড়ায় তিনি সেদিন একটা কথাই বলছিলেন, জানেন? আমার একটাই আক্ষেপ, আমদের উত্তর দিনাজপুর জেলা সংগ্রহশালায় কোন জৈন নিদর্শন নেই। আমি অনেক নিদর্শন উদ্ধার করে মিউজিয়ামে এনেছি কিন্তু এক্ষেত্রে একটিও হাতে আসেনি। আর বোধহয় সেই আক্ষেপের জায়গা রইলো না তাঁর। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার মন্দিরেই সুরক্ষিত অবস্থায় আছে “প্রতিমাসর্বতভদ্রিকা”।.
প্রায় মাস দুইয়েক আগে ইটাহার থানায় গিয়ে দেখেছিলাম। থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার অভিজিৎ দত্ত মহাশয় দেখিয়ে বলেছিলেন- এই দেখো, এটা জৈন মূর্তি। ভাল করে খুটিয়ে দেখলে দেখা যাবে নীচে লেখা আছে “প্রতিমাসর্বতভদ্রিকা”। একে জৈন চতুর্মুখ বা চৌমুখও বলা হয়। চারদিক অর্থাৎ পূর্ব,পশ্চিম, উত্তর, ও দক্ষিণ এই চারদিকে চারজন তীর্থংকরকে নির্দেশ করে এই চৌমুখ। “প্রতিমাসর্বতভদ্রিকা” অর্থাৎ চারদিকের যে দিক থেকেই দেখা হোক না কেন, তা পবিত্র এবং মূলত চারদিকেই বিরাজমান। জৈন ধর্মে এর গুরুত্ব, মঞ্জুশ্রীমূলকল্পে এর আখ্যান, ইত্যাদি এগুলো পরবর্তীতে বিস্তারিত প্রবন্ধে আলোচনা করব। ইটাহার থানা ও ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে ধন্যবাদ এইরকম একটি নিদর্শন উদ্ধার করে সুরক্ষিত রাখবার জন্য। এই অতুলনীয় সম্পদ আগামী দিনে উত্তর দিনাজপুর জেলার জন্য শুধু চারদিক নয়; অনেক নতুন দিকের উন্মোচন করবে!
*****************************
0 Comments