মেঘ শান্তনু’র দুটি কবিতা

মেঘ শান্তনু on

রূপান্তর

হ্যারিকেনের আলোয়
বাবা ভাই বোন সবাইকে ভাত বেড়ে দিয়েছেন মা,
মা খাবেন সবার শেষে গা ধুয়ে এসে
যখন কেউ জেগে থাকবে না আর !

মাঝরাতে ঘুম ভেঙে ছেলেটি দেখছে
শূন্য হাঁড়ি,
শূন্য থালা
জলের গেলাস
আসন পেতে খেতে বসেছেন মা

থালার উপর শুয়ে আছে চাঁদ আর তারা
রাশি রাশি জোনাকি
মিটমিট করে চলেছে অবিরাম

ছেলেটি রোজ মা-কে একটু একটু করে নক্ষত্রে রূপান্তরিত হতে দেখছে…


ছায়াছবি

মা এর চোখের জল আমি বহুবার দেখেছি । দেখেছি ভিজে যাওয়া পথে নেমে আসে সন্ধে । সন্ধের বুকে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরে মানুষ । উঠোনে ছায়া ফেলে দাঁড়িয়ে থাকে ঠাকুরদার আমলের পুরনো নিম ‌। বাগানে বেতের চেয়ারে বসে থাকে অশীতিপর নিঃসঙ্গ বাবা । ছোটো বোন দুলে দুলে জীবন বিজ্ঞান পড়ে । তার দুই বিনুনি দুলতে থাকে পড়ার তালে তালে । দেখি ফুলে ফুলে ঢেকে গেছে মা এর প্রিয় জুঁই আর গন্ধরাজ ।

মা কোথাও নেই এখন । আমি এই আবছা কুয়াশায় বাড়ির চারপাশে ঘুরে ঘুরে মা এর দুঃখগুলো কুড়োতে থাকি ।


ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দিয়ে মন্তব্য করুন

Categories: কবিতা

মেঘ শান্তনু

জন্ম ১৯৮৫র ১৭ই অক্টোবর। বেড়ে ওঠা কলকাতা, হুগলী এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায়। বর্তমানে রাজপুর-সোনারপুর অঞ্চলের বাসিন্দা। কিশোর বয়সেই পিতৃ-মাতৃ-হীন। শৈশব থেকেই বাংলা সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ। প্রথম লেখালিখি শুরু স্কুল ম্যাগাজিনে। ২০০৭ এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণীবিজ্ঞানে সাম্মানিক স্নাতক। ২০১০ এর পর নিয়মিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি শুরু। ২০১৩ থেকে অপদার্থের আদ্যক্ষর পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বে এবং একজন একনিষ্ঠ লিটল ম্যাগাজিন কর্মী। পেশা শি়ক্ষকতা। লেখালিখি ছাড়াও গ্ৰুপ থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত বহু বছর। বর্তমানে দু'টি লিটল ম্যাগাজিন মেলার আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য। মূলত কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ লেখক। কৃত্তিবাস, শহর, মধ্যবর্তী, মাস্তুল, ঝিনুক, রোদের ডানা, ডাকবাক্স, রাত্রি সব জানে, নবাঙ্কুর, রঙছুট, সমিধ, আইপোয়েট, নিয়ন, অনর্গল, রসে বসে, দর্পণ, অদ্ভূতুড়ে, অপদার্থের আদ্যক্ষর ইত্যাদি আরো অসংখ্য পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত। ২০১৮ তে সপ্তর্ষি প্রকাশন আয়োজিত 'তরুণ কবির স্পর্ধা'য় নির্বাচিত দশ জন কবির একজন হিসেবে প্রথম ব‌ই প্রকাশ। প্রথম কাব্যগ্ৰন্থ 'উপেক্ষিত ধুলোবালি'।

0 Comments

মন্তব্য করুন

Avatar placeholder

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।