দুটি কবিতা
হত্যাকারী
যা চাইবে লিখতে হবে আদেশ মতো
অনুভূতি ভীষণ নরম, আমরা মানি
লিখতে গেলেই আগুন লাগে সংস্কারে
দেশটা তোমার পিতামহের সবাই জানি !
ভাঙলে খাঁচা, মুক্ত ডানা, পক্ষী ফুরুৎ
মিছিল মিটিং চলতে থাকে দাঙ্গা বাধে
আড়াল থেকে ডাক দিয়েছে সুবোধ শিশু
কুমীরও আজ হিসেব কষে তুমুল কাঁদে !
বুলেট চলুক, অস্ত্র শানাও, যুদ্ধ হবে
ডেমোক্রেসি মহৎ সেটা বুঝতে শেখো,
ভোটের মানুষ, সংখ্যা কজন? কোন শিবিরে ?
এসব ভেবেই ইস্তেহারে স্বপ্ন লেখো ৷
ভাতের আকাল হলে সবাই ধর্ম খাবে
কবর কিংবা ঘরের ভেতর ঢুকবে ছেলে,
সুযোগ বুঝে বদলে ফেলো জামার কালার
কলম তোমার বিক্রী হবে চৈত্র সেলে
গরু, শুয়োর ভোটের কাজে খুব জরুরী
ওদের সবাই যত্নে রাখো, জড়িয়ে ধরো,
মানুষ কেন নমকহারাম অবুঝ এমন !
অবাধ্যতার শাস্তি ওদের জবাই করো ৷
একটা দেশে অনেক মানুষ, ভাতের অভাব !
রহিম চাচার ক্ষেতের ফসল আর ফলেনি,
শপিং মলের পাশেই দোকান তারক দাসের
সারাটি দিন উড়লো মাছি, লোক আসেনি !
গ্রামের মেয়ে লক্ষ্মী সোরেন হারিয়ে গেলো,
খুবলে খাওয়া রক্ত শরীর কাদের পাড়ায়,
বাঁচার লোভে রঙ মেখে খুব শরীর নিয়ে
লজ্জা ভুলে কারা তোমার পথেই দাঁড়ায় ?
এসব দেখেও চুপ থাকবে ভয়ের চোটে ?
কিসের কবি? শিল্পী কিসের? অদরকারী!
দিনের শেষে মুখোমুখি দাঁড়াও নিজের
প্রতিবিম্ব তোমার নাকি হত্যাকারীর ?
আমরা
একটা গোপন যুদ্ধবিমান আমার আছে
মোমের উপর আগুনশিখার উদার সাজ
অযোধ্যা আর দিল্লী ঘুরে ঘুমিয়ে পড়ি
আমরা যারা চশমা আঁটা দাঙ্গাবাজ
কোনটা আমার ধর্ম আর কোনটা স্বদেশ ?
সভ্যতাও থমকে দাঁড়ায় পাড়ার মোড়ে
এমন দিনে ভালবাসার নতুন ধরন
বুকের ভেতর বুলেট ঢোকাও জড়িয়ে ধরে
দিনের বেলা উতল হাওয়া নন কম্যুনাল
সেল্ফি তুলে রাঙিয়ে দিলাম তিনটি রঙে
রাতের বেলা আবার যখন পোশাক খুলি
প্রতিচ্ছবির ফিচেল হাসি অন্য ঢঙে
আস্কারা দিই লুকিয়ে রাখি তাকেই এখন
মাংসাশীরা ঠিক জেনেছে রক্ত স্বাদ
দশটা ছটা অফিস সেরে সার বুঝেছি
বই এর ভেতর একলা ঘুমায় সাম্যবাদ
এসব কিছুই যে যার মত সবাই বুঝি
জলের উপর নৌকা ভাসাই খুব মানবিক
কিন্তু আজও বুকের ভেতর যত্নে রাখি
একটা মানুষ, ভীষণ রকম
সাম্প্রদায়িক ৷৷
0 Comments