চৈত্রী ব্যানার্জী-র গুচ্ছ কবিতা
আরোগ্য হুইসেল
এমনি প্রত্যহ আষাঢ়ের অনাবৃষ্টি বিকেলে,
মেয়েটা ছুটে আসে ছাতাহীন মাথাহীন ধড়।
মধ্যবর্তী স্টেশনের আরোগ্য হুইসেল শুনে
বৃষ্টিলোভাতুর।
ডান করতলে;
হাঁপ ধরা বাম বুক চেপে ধরে তার মনে হয়
হৃদয় এক মুঠোফোন; গোরিলা গ্লাস ভেঙে গেলে
দেখা যায় ছোঁয়া যায়
একটু আধটু আঠালো জমিন।
সেই থেকে সাবধানী মেয়ে
সাদা থানে মুড়েছে হৃদয়;
যে বুকের ভার আছে
তরঙ্গে ঈথার আছে
আপাতত উপলব্ধ নয়।
পরিযায়ী
এই যে একপুকুর মোহো ভুলে
পাতিহাঁসের মত উড়ে বেড়াচ্ছো মেঘে
মেঘে ,
বৃষ্টি এলে কতদূর যাবে!
উড়তে উড়তে ডানা ক্লান্ত পরিযায়ী
সাইবেরিয়া ছেড়ে এ বঙ্গে এলেই যখন ,
দিঘিধারে সমস্ত মানকচু পাতায়
চোখের জল জমিয়ে রেখো।
প্রেমভ্রষ্ট কবি দেখে আনন্দ পায়;
আশা করে,
ওই সমস্ত হংস চক্ষু নোনা জল একত্র
হয়ে
কোনদিন কার কোন গাছের গোড়ায়
এসে জমবে,
নোনা লেগে ধ্বসে যাবে সমগ্র বাগান।
অপেক্ষা করো পাতিহাঁস;
এত দূর উড়তে উড়তে এলেই যখন!
প্রত্যাবর্তন
আমার প্রত্যেক শ্বাসে বারুদের গন্ধ;
ভেবে
সরিয়ে নিলে মুখ
এবার, মানবীবোমা হয়ে ফিরে এসেছি।
যাকেই জড়াবো;
বিস্ফোরণ তোমার এ শহরেই হবে ।
আমার প্রত্যেক ফোঁটাই অম্ল জারক;
ভেবে
সরিয়ে নিলে বুক
এবার, বায়ব বীজাণু হয়ে ফিরে এসেছি।
নাও,
কিভাবে নিঃশ্বাস নেবে !
ফানুস
একটা সেফটি পিন এর দোকানের খোঁজে এতদূর এলাম।
পরখ করার মতো একটাও বেলুন রাখোনি?
ফুসফুসে নোয়াখালীর দাঙ্গা হোক রক্ত উঠে মরি
ঠারে ঠারে জানান দেবো
আমার লোহিত কণিকা উন্নয়নমুখী।
হৃদয়ের নিম্নকক্ষে দুষ্টু ছেলে দাপিয়ে বেড়াক
দশ বিশ টা অলিন্দের পঞ্চায়েত বিরোধী শূন্য হোক
অতঃপর স্বয়ংসেবক হবো;
স্বৈরাচারী ফুসফুস গেরুয়া করে নেবো বৈরাগী রঙে,
তাতে রাষ্ট্রক্রীড়ায় যদি বাড়েও বা কুঁচকির ব্যথা
আপাত দীর্ঘশ্বাসের ভার তোমাকে দিলাম…
বসিরহাটে নিত্য যাই নিত্য ফিরে আসি;
তবু একটিও সম্রাজ্ঞীসুলভ শৌচাগার খুঁজে পেলাম না
0 Comments