বাঁচার রসদ
আজ সুপার মার্কেটের পুরো গাছগাছালির আড়াল ঘিরে শুরু হয়েছে পৌষ পিঠের মেলা। এই মেলার সামনের পাড়ায় বস্তি এলাকায় কিছু গরীব সংসারের আবাস। তারা সুপার মার্কেটের সামনে থাকে এই নিয়ে তাদের গর্বের শেষ নেই। কারণ এই মার্কেট জুড়ে অনুষ্ঠিত হয় মেলা,সার্কাস আর বাজার। আর সেখানে কাজ করে তাদের ভালমন্দ খাবার জুটে যায়। শুধু বর্ষাকালে কোনো অনুষ্ঠান হয় না। তখন ঝড়ে ডালপালা ভাঙ্গে আর সেই ডালপালা নিয়ে এসে তারা বাড়িতে ফুটিয়ে নেয় দুমুঠো চাল। পুকুরের গেঁড়ি, গুগুলি তখন তাদের একমাত্র ভরসা।
আজ পৌষ পিঠের মেলা। দুটি বছর দশেকের শিশু চলে এসেছে মেলায়। তাদের টাকা পয়সা নেই। ঘুরে বেড়ায় উল্লাসে। তারপর বেলা বাড়ে আর তাদের খিদে বাড়ে সমানুপাতিক হারে। খিদে নেই ওদের যারা ঘুরে ঘুরে পিঠে খায়। ফেলে দেয় অর্ধভুক্ত পিঠের শালপাতার থালা। ডাষ্টবিন ভরে যায় খাবারসহ শালপাতায়।
শিশু দুটি লোভাতুর হয়ে ওঠে।
পাশে আলো মুখে একজন মহিলা এগিয়ে আসে। সে বলে, তোদের বাড়ি কোথায়। শিশু দুটি দেখিয়ে দেয় তাদের পাড়া। মহিলা বলে, আমাকে তোদের বাড়ি নিয়ে যাবি?
শিশু দুটি হাত ধরে নিয়ে আসে তাকে। পথে হাঁটতে হাঁটতে মহিলাটি বল, আমি তোদের দিদি। আমাকে দিদি বলে ডাকবি।
বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিশু দুটি বলে, মা মা দেখ দিদি এসেছে আমাদের বাড়ি। মা তো অবাক। তারপর জানতে পারে সব। পেতে দেয় তালপাতার চটাই। একগ্লাস জল খেয়ে দিদি ব্যাগ থেকে বের করে পিঠের প্যাকেট। সকলে একসাথে বসে খায়।
দিদি বলে শিশু দুটির মা কে, আমার ছেলেপুলে হয় নি। তোমার বাচ্চাদের দেখে চলে এলাম তোমাকে দেখতে। জানো ভগবান, সকলকে সবকিছু দেয় না। তোমাকে যেমন টাকা পয়সা দেয় নি আর আমাকে আবার সন্তান দেয় নি।
তোমার পুত্রসন্তানদের আমি আজ থেকে দেখাশোনা করব। তুমি অনুমতি দাও বোন…
0 Comments