তারিখ
লোকটি রাত বারোটার পর ক্যালেন্ডারের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। তারপর হাতের পেনটা দিয়ে সবেমাত্র পেরিয়ে যাওয়া তারিখটিকে কেটে দিয়ে বলে – জীবন থেকে আরও একটি দিন চলে গেল। কিছুই করা হলো না। এইভাবে সপ্তাহের শেষ তারিখ, মাসের শেষ তারিখ এবং বছরের শেষ তারিখ কেটে বলে – জীবন থেকে একটি সপ্তাহ, একটি মাস, ক্রমে একটি বছর কেটে গেল কিন্তু কিছুই করা হলো না। তিনি হয়ত উল্লেখযোগ্য কিছু একটা করতে চান যা এখনও পর্যন্ত করে উঠতে পারেন নিই। হয়ত-বা কিছুর স্বীকৃতি পেতে চান। পান নিই। কিন্তু কী! স্পষ্ট নয়।
প্রতিবছরের মতো এবছরও প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে পাড়ার বড়ো মাঠে স্পোর্টস হয়। পাড়ার লোকেরা নাম দেয়। অনেক ইভেন্ট। এবছর একটি নতুন ইভেন্ট চালু হলো। না কী, নথিভুক্তকারী ক্যান্ডিডেটকে তার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলতে হবে বিচারকদের সামনে এবং যেটা তাদের মতে বেশ আকর্ষণীয়, মজাদার এবং একই সঙ্গে ব্যতিক্রম, তাকে পুরস্কৃত করা হবে।
লোকটি ভাবে সে কী বলবে! সে তো ব্যর্থ। উল্লেখ করার মতো কিছু আছে কী! তবুও সে নাম দিলো যদি কিছু বলা যায়। সে ভাবলো সে নিজে না পারুক, তবুও ব্যর্থতার গল্প সফলতার কথা বলে। যাই হোক ঘোষণা অনুযায়ী তার সময় আসলে সে তার ক্যালন্ডারে দাগ দেওয়ার ঘটনাটি বর্ণনা করে। সবটা শুনে বিচারকেরা একে অপরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে সমস্বরে বললো – অদ্ভুত! এরকমও হয়। আবার বিগত দশ বছরের ক্যালেন্ডার এনে হাজির করেছে। এহেন ব্যতিক্রমী লোককে অবশ্যই পুরস্কৃত করা উচিত। করলো তাই।
লোকটি কিন্তু তারপর থেকে রাত বারোটার পর আর ক্যালেন্ডারের সামনে দাঁড়াতো না …
1 Comment
রাহেবুল · এপ্রিল 24, 2020 at 12:28 অপরাহ্ন
ভালো লাগলো।