লালকুঠির ঘুড়ি
লালকুঠি এলাকার ছাদে ছাদে চলছে ঘুড়ি উৎসব ।
সালাউদ্দিনের এলাকাবিখ্যাত ঢাউস ঘুড়িটা একটু উপরে উঠেই আবার বামে টাল খেয়ে পড়ে যাচ্ছে । যতই ডানে ভারা দেয়া হোক না দেন, কিছুতেই কিছু হচ্ছে না ।
এদিকে একে একে লালিনের কালবৈশাখিঘুড়ি, সাদ্দামের লাটিমঘুড়ি এমনকি দূর্বল হান্নানের পিচকি টাট্টুঘুড়িটাও বারদুয়েক ডানে বায়ে পাক খেয়ে তরতর করে আকাশে উড়ে গেল!
একটা করে ঘুড়ি ওড়ে, আর বিকট শব্দে পটকা ফাটে । আনন্দে চিৎকার করে ওঠে প্রতিটা বাড়ির ছাদ । চুপ খালি সালাউদ্দিন । চুপ সালাউদ্দিনের ঢাউসঘুড়ি!
বন্ধু ইদ্রিস পাশেই ছিল । সালাউদ্দিনের দুঃখ দেখে সে-ই বুদ্ধিটা দিলো । সালাউদ্দিন না হো না করেও রাজি হলো ।
শেষপর্যন্ত সালাউদ্দিনের ঘুড়িটা আকাশে উড়তে শুরু করে । সাথে সাথে চিৎকার আর উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরা এলাকা । বিকট শব্দে আবারও পটকা ফুটতে থাকে ।
পরতেক বারের মতো এইবারও আমাগো সালার ঘুড়িই জিত্তো, সালার ঘুড়িতে কি দমরে ভাই, দেখলেই মাথা ঘুরায়, সালার নাটাই দেখছ, কেউ পারব এমন জিনিস বানাইতে? আর সালার সুতায় মাঞ্জার কথা কেউ কস না কেন?— চারিদিকে কথার ফুল ঝরে যায়!
সময় ওড়ে
পটকা ফোটে
সালার ঢাউস ঘুড়ি গোঁ গোঁ আওয়াজ তুলে ডাকতে থাকে
এলাকার ছেলেরা একটু পর পর শিস বাজিয়ে গান ধরে…
বিষয়টা দারুণ! বুদ্ধিটা কাজে লাগায় ইদ্রিসের মন খুশিতে ডগমগ! প্রচন্ড বাতাসে ইদ্রিসের চুল ওড়ে, ওড়ে জামা । ইদ্রিস চিৎকার করে গান গায় । ইদ্রিস হো হো করে হাসে । ইদ্রিস আকাশের গায়ে লিখতে থাকে, শূণ্য খাতার গান । ইদ্রিসের ভারে উড়তে থাকে সালার ঢাউসঘুড়ি ।
0 Comments