লক আনলক
দু’হাতে তিনটে ব্যাগ। একটায় চাল, একটায় মুদি, আর একটাতে কাঁচাবাজার। রমেশবাবু সাইকেল চালাতে জানেন না। হেঁটে যান, টোটোয় ফেরেন।
ব্যাগভর্তি মালপত্র নিয়ে হাঁপাচ্ছেন। বাজার থেকে বেরবেন তবে তো টোটো! চায়ের দোকান দেখেই ইচ্ছে হলো। বাঙালি এই দুটো প্যাশন স্বযত্নে আগলে রেখেছে। ব্যাগ ভরে বাজার আর চায়ের দোকান।
“চিনি ছাড়া লিকার।”
“বিস্কুট?”
“না।”
আড়চোখে ব্যাগ দেখে, “লকডাউন আনলক হয়ে গেছে, শোনেন নি?”
“হ্যাঁ, দেশ না-তো তালা।”
চায়ের গ্লাস হাতে রমেশবাবু— যেন সোমরস পান করছেন। মাস্ক থুতনিতে।
“বাজারে যা ভিড় ভয়ই করে!”
“টিভি দেখেন তো ? খবরের চ্যানেলগুলো দেখবেন না, মশাই!”
“কী আর করবো! রিটায়ার মানুষ। কোথাও বেরতেও পারছি না। সারাদিন ঘরে বসে…।”
টোটো থামলো বাড়ির দরজায়। রমেশবাবু কলিং বেলে আঙ্গুল ছোঁয়ালেন না।
“কই গো, শুনছ? দরজা খোল!”
চার বারের বার গিন্নি শুনলেন। দরজা খুলেই, “তুমি ওখানেই দাঁড়াও! আগে স্যানিটাইজ করে নি।”
তিনটে ভরা ব্যাগ দেখে প্রায় আঁতকে উঠলেন, “আবার এতগুলো বাজার নিয়ে এলে! বললাম যে, ঘরে যা আছে তিন দিন চলে যাবে। বাজারে না গেলেই নয়?”
“কখন আবার লকডাউন ঘোষণা করবে!”
“তাতে আটকাচ্ছে কী? তুমিই তো ঘরে করোনা ডেকে আনছ!”
“এই তো সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলছি।”
রমেশবাবুর দুই হাতের তালুতে ফেনার বুদবুদ।
0 Comments