পাতাঝরা
পাতাঝরা ১
ক্রমাগত ব্যর্থতা লিখে যাই
পাতাঝরার দিনরাত ভরে…
বুঝেছি প্রতিটি মানুষ আসলে
এক একটি নির্জন বন্দর
একদিন নাব্যতা কমে এলে জাহাজ আসেনা আর।
সব শব্দ, যা কিছু শুনেছি
ঝরে পড়ে চেনা রক্তপাতে
ক্ষতচিহ্ন বাড়তে বাড়তে
একটা বিশাল আদিম শূন্যতা
গহব্বরে মুখ ঢেকে যায়।
শিল্পীর বিনির্মাণ হ’লে পট যায় ঘুরে
সম্পর্ক মুড়ে যায় অচেনা পথের বাঁকে
নিঃশ্বাসের মত কিছু জরুরী মানুষ
সেই আদিম শূন্যতায় ফিকে হতে থাকে
শুধু ক্ষতচিহ্ন জেগে থাকে জন্মদাগের মত
ব্যথাহীন…নিরাময়হীন ও।
পাতাঝরা ২
বয়স বাড়লে পরে
সে আদিম তীব্রতা নিভে আসে দ্রুত
এই যে কেমন বসে থাকা মুখোমুখি
সামাজিক; তপ্ত শ্বাস পোষ মানা ভীত
সে অনেক বসন্তের ঝড়, পথচলা, উষ্ণ চাহনি
পার করে আজকের অবসর বৈধতা পেয়েছে।
ভদ্রতার বুলি নিতান্তই প্রয়োজনহীন
ফর্মালিটি, দু চারটে কুশলসংবাদ
যৌবনের বিনিময়ে এখন শিখেছি আমরা
সুদক্ষ অভিনয়ে চমৎকার কেটেছিল সান্ধ্য আসর
স্যালাডের প্লেট আর ওয়াইন গ্লাসে লেখা
আমাদের ফেলে আসা দিন।
শুকনো হেসে, ন্যাপকিনে স্মৃতি মুছে বলি,
“চলো একবার ফিরসে আজনবী বন যায়ে হাম দোনো!”
এখন আমরা পরিচিত, স্বীকৃত, সামাজিক
আমি আর মিসেস…যেই নাম মুখে নিতে নেই।।
পাতাঝরা ৩
কখনো জীবনে কিছু মানুষ আসে
দু একটা হাল্কা কথা, হাসি ছুঁড়ে দিই
লক্ষ্য করি চোখের তারায় আবছাপুকুর
তরঙ্গহীন না কি ঢেউ ওঠে আলগোছে ঢিলে?
এক জীবন বয়ে যায় জানতে
প্রত্যুত্তরে হাসির অর্থ মানেবইয়ে অলিখিত ছিল।
ইমারত ছুঁয়ে থাকে মেঘ
তার নিচে ছায়ার গালিচা বেয়ে
ফেরিওয়ালা হেঁটে চলে হতাশ্বাস
নামহীন ছোট্ট স্টেশন যেমন
দূরপাল্লার গাড়ি পাস করে, দাঁড়ায় না কোনোদিন।
কিছু মানুষ আসে
কথা বলে, হাসে
চলে যায়… আর তার পর মনে হয়
তারা ঠিক ওই লাইনগুলোর মত
তিনরাত কাটাকুটি করেও যারা কবিতা হয়ে ওঠে না।।
0 Comments