নদী কথা
১
ভালোবাসতে জানে। থেমে থাকতে নয়। যেমন স্নিগ্ধ নদী বয়ে চলে
পাহাড় থেকে সমুদ্রে।
এক পিপাসী তাকে জিজ্ঞাসিল,
‘আচ্ছা নদী তুমি তো একই সাথে কত প্রানের পিপাসা মেটাও, তবেকি
সকল’কে তুমি সমানভাবে ভালোবাসো?’
ভালোবাসা ঠিক নদীর মতো বয়ে চলে, আপন মহিমায়।
তাকে ধরে রাখা কার সাধ্য? মানুষ এর মন আধারের মতো, কিন্তু
নদী একই সাথে পাহাড়-সমতল-জঙ্গল-মোহনা সবার পিপাসা
মেটায়। তেমনি ভালোবাসাও…..
২
এ নদী পাহাড় ছোঁয় নি কখনও, ছোঁয় নি সমুদ্রও।
তার বিস্তার কিন্তু আকাশ-দিগন্ত জুড়ে। কারণ অকারণে গভীরতা মাখেনা,
বয়ে চলে বাস্তবতার নুড়ি-পাথর সঙ্গে নিয়ে। ঠিকানা বদল করে
ঠিকই, তবে দ্বিপাক্ষিক বিনিময়ে উজাড় করে দেয় প্রেমের স্রোত। তুমি যদি
ভেসে যেতে চাও বাঁধনছাড়া কচুরিপানার মতো, তৃষ্ণার্ত রবে না।
শুধু আলিঙ্গনে মোহনার কথা বলোনা নদী’কে।
আমি নদী’র ইচ্ছেস্রোতে কল্পনার ধোঁয়াময় মাঝির ভেক ধরে
বহুবার পারাপার হতে চেয়েছি। ছুঁতে চেয়েছি
তার কাল্পনিক বিস্তির্নতা, আপেক্ষিকতা’র ঢেউ ছড়িয়ে
সে আমায় মুক্ত করেছে বারংবার। নদী ভালোবাসতে জানে, জানে
ভাসিয়ে দিতে নতূন ঠিকানায়….
৩
অসময়ের (হয়ত) বরষা’য় প্লাবিত, এ নদী।
শিশিরবিন্দু ঝরে পড়ে প্রতিদিন, সবার অলক্ষ্যে। ভালোবাসে। তাই
একাত্ম হয়ে সহজেই মিশে যেতে পারে নদী’র বুকে।
শুধু একুল ওকুল ভাসানো’র অধিকার’টুকু নেই, সে যে শান্ত- মুক্ত ধারা।
বরষা বড়ই ক্ষিপ্ত, ক্ষরস্রোতা।
নিমেষেই ভাসিয়ে দেয় নদী’র স্নিগ্ধতা, তোলপাড় করে তোলে মুহুর্তেই
সাজানো-গোছানো স্রোত। এই তার অধিকার। তাকে তো ভালোবাসা যায় না।
নদী বয়ে চলে বুকে নিয়ে শিশিরকনা’র ভালোবাসা আর
বরষা’র ভার, সামনে আরো সামনের দিকে….
৪
আমার বুকের ভেতরও একটা নদী আছে
সে নদী’র স্রোতে ভালোবেসে ডুবে থাকা যায়,
শুধু ওপারে যাওয়া সম্ভবপর নয়…।।
0 Comments