দু’টি কবিতা
দেশহীন
যে নদীটার নাম বদলে গেছে বারবার
উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত
কখনো সাংপো,
কখনো দিহং,
কখনো যমুনা
– তোমার দেশে তাকে কি বলে ডাকো ?
যে পাখিগুলো প্রতি শীতে
কলকাকলিতে ভরিয়ে দেয় তোমার শহর
তার দেশ কোথায় খবর রাখো ?
যে বাতাস নিদাঘ গ্রীষ্মের শেষে
বয়ে নিয়ে আসে মৌসুমী আনন্দ
তারও কি কোনো দেশ আছে ?
নদী,বাতাস,পাখি – এদের কোনো দেশ নেই।
দেশ আছে তোমার আমার
অবিচ্ছিন্ন মাটির বুকে বসিয়েছি কাঁটাতার।
পেতেছি নিজের নিজের মত সংসার
ধর্ম দিয়ে,ভাষা দিয়ে পাঁচিল তুলেছি কত
বিভেদ আরও দৃঢ় হয়েছে অবিরত।
কি লাভ হল বলো এত পাঁচিল তুলে ?
তোমার দেশই আজকে তোমায় বলছে যেতে ভুলে !
যে গাছ মাটি আঁকড়ে থাকে
হঠাৎ একদিন তারও শিকড় আলগা হয়,
হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে নিজের পরিচয়।
তার চেয়ে বরং চলো
সেই অনুপ্রবেশকারী নদী,উদ্বাস্তু বাতাস
আর শরণার্থী পাখিগুলোর মত হই –
ওদের কোনো দেশ নেই,
নেই দেশ হারাবারও ভয়।
ঠিকানা : দিকশূন্যপুর
প্রতিবিম্ব দেখল নাগরিক চৌরাস্তায় এসে
নাকি চৌরাস্তার প্রতিবিম্ব গেঁথে গেছে নাগরিক জীবনে ?
শিকড়ে লেগেছে টান
রাজার পোশাক ক্রমে বিলীয়মান
ছিন্নমূল স্মৃতিগুলো ফিরে ফিরে আসে সময়ের আয়নায়।
চৌরাস্তার মোড়ে লোকে লোকারণ্য
কোন পথে পা বাড়াবে ভিড় ?
দেওয়ালে ঠেকলে পিঠ জন্ম নেয় প্রতিবাদ
মুঠোটা শক্ত থাক
ঠিকানা না হয় হবে দিকশূন্যপুর।
0 Comments